18.3 C
Munich
Monday, July 7, 2025
Home Blog Page 3

অর্থনীতিতে অদৃশ্য হস্ত কী?

0

 অর্থনীতিতে অদৃশ্য হস্ত কী?

অর্থনীতিতে “অদৃশ্য হস্ত” (Invisible Hand) হলো একটি ধারণা যা প্রথম প্রচলন করেন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ। তিনি তার “The Wealth of Nations” (১৭৭৬) গ্রন্থে এই তত্ত্ব উপস্থাপন করেন। অদৃশ্য হস্ত বলতে বোঝানো হয় যে, ব্যক্তিগত স্বার্থে পরিচালিত ক্রেতা ও বিক্রেতারা যখন মুক্ত বাজারে নিজেদের লাভের জন্য ক্রয়-বিক্রয় করে, তখন তারা নিজেদের ইচ্ছায় বা চেষ্টা না করেও পুরো অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর ফলাফল বয়ে আনে।

অর্থনীতিতে অদৃশ্য হস্ত

 অর্থনীতিতে অদৃশ্য হস্তের মূল ধারণা

অ্যাডাম স্মিথের মতে, ব্যক্তি নিজের স্বার্থের পেছনে ছোটার সময় স্বাভাবিকভাবেই অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজের সামগ্রিক মঙ্গল অর্জিত হয়। বাজারের বিভিন্ন অংশগ্রহণকারীরা যদি স্বাধীনভাবে তাদের চাহিদা অনুযায়ী ক্রয়-বিক্রয় করে, তবে কোনো কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই অর্থনৈতিক ভারসাম্য স্থাপন হয়। এখানে ব্যক্তির মুনাফার ইচ্ছা এবং প্রতিযোগিতার শক্তি কাজ করে এবং তারা নিজ নিজ লক্ষ্য অর্জনের পাশাপাশি সমাজেরও উন্নতি ঘটায়।

উদাহরণ

ধরা যাক, একজন ব্যবসায়ী নিজের মুনাফার জন্য পণ্য উৎপাদন করে বাজারে বিক্রি করতে চায়। অন্যদিকে, ক্রেতারা নিজেদের প্রয়োজন পূরণের জন্য সেই পণ্য কিনতে চায়। এই প্রক্রিয়ায় ব্যবসায়ী এবং ক্রেতা উভয়ে নিজেদের স্বার্থে কাজ করে, কিন্তু এর মাধ্যমে বাজারে পণ্যের যোগান বাড়ে এবং চাহিদার ভারসাম্য বজায় থাকে। ফলে বাজারের অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরাও সুবিধা পায়, যা অর্থনীতির সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখে। এই প্রক্রিয়াটি একজন কেন্দ্রীয় পরিকল্পনাকারীর নির্দেশনা ছাড়াই ঘটে, যা স্মিথ “অদৃশ্য হস্ত” বলে উল্লেখ করেন।

অদৃশ্য হস্তের ভূমিকা

  • বাজারের স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ: ব্যক্তি ও ব্যবসায়িক সংস্থাগুলো নিজেদের মুনাফার জন্য কাজ করতে গিয়ে, তারা নিজের অজান্তেই বাজারে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করে, যেমন পণ্যের দাম এবং উৎপাদনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা।
  • সমাজের কল্যাণ: ব্যক্তিরা তাদের নিজস্ব লাভের জন্য চেষ্টা করলেও, এটি সমাজের সার্বিক কল্যাণে অবদান রাখে। ব্যক্তির মুনাফা অর্জনের প্রক্রিয়ায় চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্য তৈরি হয়, যা সমগ্র অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।

সমালোচনা

অ্যাডাম স্মিথের “অদৃশ্য হস্ত” তত্ত্ব অনেক ক্ষেত্রে কার্যকর হলেও, এটি সব সময় প্রযোজ্য নয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন একটি বাজারে মনোপলি বা বাজার ব্যর্থতা ঘটে, তখন অদৃশ্য হস্ত ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়, যাতে অর্থনৈতিক অবিচার ও বৈষম্য দূর করা যায়।

উপসংহার

অ্যাডাম স্মিথের অদৃশ্য হস্ত ধারণা অর্থনীতিতে মুক্ত বাজারের প্রয়োজনীয়তা এবং তার কার্যকারিতা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি বোঝায় যে, ব্যক্তির মুনাফার স্বার্থে পরিচালিত কাজগুলি কিভাবে পুরো সমাজের জন্য উপকারী হতে পারে, যদিও তা ব্যক্তির মূল লক্ষ্য নয়।

বিদেশে উচ্চশিক্ষাঃ কীভাবে শুরু করবেন প্রস্তুতি?

বিদেশে উচ্চশিক্ষাঃ কীভাবে শুরু করবেন প্রস্তুতি?

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা অনেকের মধ্যেই রয়েছে, কিন্তু সফলভাবে এই স্বপ্ন পূরণের জন্য দরকার সঠিক গাইডলাইন, পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি। এখানে আমরা আপনাকে একটি পরিপূর্ণ নির্দেশিকা দেব, যা আপনাকে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনে সহায়তা করবে।

বিদেশে উচ্চশিক্ষা

বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি কিভাবে শুরু করবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিতভাবে নিচে ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো:

ধাপ ১: কোন বিষয়ে পড়বেন তা ঠিক করা

  • স্নাতক পর্যায়ে (Bachelor’s): যদি উচ্চ মাধ্যমিকের পর স্নাতক পর্যায়ে বিদেশে পড়তে যেতে চান, প্রথমেই ঠিক করুন কোন বিষয়ে পড়তে চান। ধরুন, যদি আপনার কোডিং ভালো লাগে, তবে প্রোগ্রামিং বা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বেছে নিতে পারেন। যদি রোবটিক্সে আগ্রহ থাকে, তবে মেকানিক্যাল বা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ভালো বিকল্প হতে পারে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনার আগ্রহ এবং চাকরির বাজারের চাহিদার মধ্যে সমন্বয় করা। বিষয় বেছে নেওয়ার পর, যে দেশগুলোতে সেই বিষয় ভালো পড়ানো হয় এবং কোন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেই বিষয়ে খ্যাতিমান, তা নিয়ে গবেষণা করুন।

  • মাস্টার্স বা পোস্টগ্রাজুয়েশন: যারা ইতোমধ্যেই স্নাতক শেষ করেছেন, তাদের বিষয় মোটামুটি নির্ধারিত থাকে। অনেকে নিজের বিষয় থেকে একটু ভিন্ন কিছু নিয়ে যেমন- অর্থনীতি, এমবিএ বা ফাইন্যান্স নিয়ে পড়তে আগ্রহী হন। ক্যারিয়ার কোন দিকে নিয়ে যেতে চান, তা নির্ভর করে বিষয় নির্বাচন করুন। স্নাতকের শেষ বছরের দিক থেকেই বিদেশে পড়াশোনার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করতে হবে। যেমন, কোন দেশে যেতে চাইছেন, কি কি কাগজপত্র লাগবে, কি ধরনের পরীক্ষা দিতে হবে – এ সবকিছু আগে থেকেই জেনে রাখুন।

ধাপ ২: কোন পরীক্ষায় বসবেন তা নির্ধারণ করা (GRE, GMAT, IELTS, TOEFL)

  • GRE বা GMAT: আমেরিকায় যারা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যেতে চান তাদের জন্য GRE (Graduate Record Examination) প্রয়োজন হয়। ব্যবসা বা মানবিক শাখার জন্য GMAT (Graduate Management Admission Test) প্রয়োজন। যাদের লক্ষ্য আমেরিকা নয়, তাদের GRE/GMAT প্রয়োজন নাও হতে পারে। তাই, গন্তব্য দেশ অনুযায়ী পরীক্ষা নির্ধারণ করুন।

  • IELTS বা TOEFL: ইংরেজি ভাষার দক্ষতার প্রমাণ দেওয়ার জন্য IELTS (International English Language Testing System) বা TOEFL (Test of English as Foreign Language) পরীক্ষাগুলো অন্যতম। IELTS সাধারণত UK ও অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক এবং TOEFL মূলত আমেরিকা ভিত্তিক। গন্তব্য দেশের উপর নির্ভর করে কোন পরীক্ষায় বসবেন তা ঠিক করুন। বেশিরভাগ দেশে এই দুই পরীক্ষারই মেয়াদ ২ বছর।

ধাপ ৩: কাগজপত্র প্রস্তুত করা

  • আবেদন করার জন্য প্রথমেই যেসব কাগজপত্র দরকার তা হলো: CV, SOP (Statement of Purpose), একাডেমিক মার্কশীট, IELTS/TOEFL ফলাফল এবং ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট। এই কাগজগুলো দিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে “Confirmation of Enrollment” পেলে ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। ভিসা আবেদন করতে গেলে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম সনদ, ট্যাক্স সনদসহ আরও কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে।

ধাপ ৪: দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

  • দেশ নির্বাচন: কোন দেশে পড়তে যেতে চান তা নির্ধারণ করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া, জীবনযাত্রার মান, চাকরির সুযোগ, স্কলারশিপ প্রাপ্তির সম্ভাবনা সবকিছু খতিয়ে দেখতে হবে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সাধারণত আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশে পড়তে যান।

  • বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন: বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করতে হলে সেই দেশের ওয়ার্ল্ড র‍্যাংকিং দেখুন। যে বিষয়ে পড়তে চান, সেটি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো পড়ানো হয় এবং স্কলারশিপের সুযোগ কেমন, সেসব বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।

ধাপ ৫: স্কলারশিপের জন্য আবেদন বা সেলফ ফান্ডিং

  • বিদেশে উচ্চশিক্ষা ব্যয়বহুল। তাই অনেক শিক্ষার্থী স্কলারশিপের জন্য আবেদন করে থাকেন। যেমন- যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ স্কলারশিপ, যুক্তরাষ্ট্রের ফুলব্রাইট, অস্ট্রেলিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ ইত্যাদি। তবে যারা নিজস্ব অর্থায়নে (Self Funding) পড়াশোনা করতে পারেন, তাদের স্কলারশিপের চিন্তা করতে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ফান্ডিংও অনেক সময় পাওয়া যায়।

ধাপ ৬: আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ (Solvency Certificate)

  • ভিসার জন্য আবেদন করতে গেলে আপনাকে আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে হবে। যদি স্কলারশিপ পান তবে বৃত্তির কাগজপত্র দেখাতে হবে। আর যদি সেলফ ফান্ডিং করেন তবে ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে।

ধাপ ৭: ডকুমেন্ট পাঠানো ও অন্যান্য কার্যক্রম

  • অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এখন শুধুমাত্র অনলাইন আবেদন গ্রহণ করে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় হার্ড কপি চায়, তাদের জন্য FedEx বা DHL ব্যবহার করে ডকুমেন্ট পাঠানো যেতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের EMS সেবা ব্যবহার করেও ডকুমেন্ট পাঠানো সম্ভব।

প্রতিটি ধাপেই যত্ন সহকারে এগোতে হবে। মনে রাখবেন, বিদেশে উচ্চশিক্ষা কেবল জ্ঞানার্জনের জন্য নয়, এটি আপনার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ। সুতরাং পরিকল্পনামাফিক কাজ করুন এবং সফলতার পথে এগিয়ে যান!

বাজার ভারসাম্য বলতে কি বোঝায় ?

বাজার ভারসাম্য: অর্থনৈতিক স্থিতির মূলধারা

ভূমিকা

ভারসাম্য বলতে স্থিতিশীল অবস্থাকে বোঝায়, যেখানে বিপরীতমুখী শক্তিগুলোর পারস্পরিক প্রভাবের ফলে একটি স্থিতিবস্থা অর্জিত হয়। অর্থনীতিতে এই ধারণাটি গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত বাজার ব্যবস্থায়। বাজারের ভারসাম্য এমন একটি অবস্থা যেখানে কোন একটি পণ্যের দাম, চাহিদা এবং যোগানের মধ্যে একটি স্থিতিশীল সম্পর্ক থাকে। এই অবস্থা একবার অর্জিত হলে পরিবর্তনের প্রবণতা থাকে না। বর্তমান প্রবন্ধে আমরা বাজারের ভারসাম্যের সংজ্ঞা, এর কার্যপ্রক্রিয়া এবং বাজার ভারসাম্য কীভাবে গঠিত হয় ও পরিবর্তিত হয়, সেই বিষয়ে আলোচনা করব।

বাজার ভারসাম্য বলতে কি বোঝায় ?

বাজার ভারসাম্য বলতে যা বোঝায় 

বাজার ভারসাম্য বলতে এমন একটি অবস্থাকে বোঝায়, যেখানে বাজারের চাহিদা এবং যোগান সমান হয়। একে অর্থনৈতিকভাবে বলতে গেলে, ক্রেতারা যে পরিমাণ পণ্য কিনতে চান, বিক্রেতারা ঠিক সেই পরিমাণ পণ্য বিক্রি করতে চান। এটি একটি দামে ঘটে, যাকে বাজারের ভারসাম্য দাম বলা হয়। এই দামে পণ্য সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে কোন ফাঁক থাকে না এবং বাজার স্থিতিশীল থাকে।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক লাইবফস্কির মতে, “ভারসাম্য বলতে এমন একটি অবস্থাকে বোঝায় যেখানে কোন অর্থনৈতিক চলকের পরিবর্তনের প্রবণতা থাকে না।” অর্থাৎ বাজার ভারসাম্যে পৌঁছানোর পর, বাজারে আর কোন বাড়তি পরিবর্তনের চাপ থাকে না।

ভারসাম্য দাম ও পরিমাণ

বাজারে যে দামে চাহিদা ও যোগান সমান হয়, তাকে বলা হয় ভারসাম্য দাম। এই দামে ক্রেতারা যে পরিমাণ পণ্য কিনতে চান, বিক্রেতারাও ঠিক সেই পরিমাণে পণ্য সরবরাহ করেন। ফলে, বাজারে কোন অতিরিক্ত চাহিদা বা অতিরিক্ত যোগান থাকে না। এই দামে বাজার স্থিতিশীল থাকে, এবং ক্রেতা-বিক্রেতারা তাদের ক্রয়-বিক্রয় করে সন্তুষ্ট থাকেন।

ভারসাম্য দামের সাথে যুক্ত আরেকটি বিষয় হলো ভারসাম্য পরিমাণ। যে পরিমাণ পণ্য চাহিদা ও যোগানের সমান হওয়ার সময় বিক্রি হয়, সেটাই হলো ভারসাম্য পরিমাণ। এই অবস্থায় বাজারের সকল পক্ষের মধ্যে একটি সুষ্ঠু লেনদেনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

বাজার ভারসাম্য পরিবর্তনের কারণ 

বাজারের ভারসাম্য স্থায়ী নয়; এটি বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হতে পারে। বাজারে চাহিদা বা যোগানের যেকোনো একটি পরিবর্তিত হলে ভারসাম্য ভেঙে যায় এবং নতুন ভারসাম্য তৈরি হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোন পণ্যের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়, তবে সেই পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায় এবং বাজারে নতুন ভারসাম্য তৈরি হয়। একইভাবে, যোগান বেড়ে গেলে পণ্যের দাম কমতে পারে এবং সেই অনুযায়ী নতুন ভারসাম্য গঠন হয়।

চাহিদা বা যোগানের যেকোনো পরিবর্তন অর্থনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। বাজারের মূল্য এবং পরিমাণ সমন্বয় করে বাজার নিজেই ভারসাম্য তৈরি করে।

উপসংহার

বাজার ভারসাম্য অর্থনীতির একটি মৌলিক ধারণা, যা একটি নির্দিষ্ট পণ্যের দাম, চাহিদা এবং যোগানের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে। এটি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং বাজার ব্যবস্থার স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করে। চাহিদা ও যোগানের পরিবর্তনের সাথে বাজারের ভারসাম্যও পরিবর্তিত হয়, এবং এর ফলে নতুন দামের এবং পরিমাণের ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। এই প্রক্রিয়া অর্থনীতির কার্যকরী ধারাকে সচল রাখে, যা বাজারের প্রবাহ এবং লেনদেনের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।

ফ্রান্স আইফেল এক্সেলেন্স স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ২০২৫

ফ্রান্স আইফেল এক্সেলেন্স স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ২০২৫

আ(caps)পনি কি কখনও ইউরোপের একটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনামূল্যে পড়ার স্বপ্ন দেখেছেন? ফ্রান্স আইফেল এক্সেলেন্স স্কলারশিপ প্রোগ্রাম আপনার সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে! যদি আপনার একাডেমিক রেকর্ড অসাধারণ হয়, তাহলে আপনি ক্যাম্পাস ফ্রান্স-এ বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ পেতে পারেন। ফরাসি সরকারী স্কলারশিপ ২০২৫ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ, যারা ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় মাস্টার্স এবং পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে ক্যারিয়ারে সাফল্য অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে।

ফ্রান্স আইফেল এক্সেলেন্স স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ২০২৫

ফ্রান্স আইফেল এক্সেলেন্স স্কলারশিপ

এই আইফেল স্কলারশিপ এর মূল উদ্দেশ্য হলো ফ্রান্সের উচ্চশিক্ষাকে প্রচার করা, বিশেষ করে যারা ফ্রান্সে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী তাদের জন্য। ক্যাম্পাস ফ্রান্স এই প্রোগ্রামটি পরিচালনা করে, যা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত এবং একটি নিবেদিত দল শিক্ষার্থীদের ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষার সুযোগ অন্বেষণে সহায়তা করে।

এই আন্তর্জাতিক স্কলারশিপটি বিশেষভাবে ফ্রান্সের বাইরে বসবাসরত ব্যক্তিদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ক্যাম্পাস ফ্রান্স ফোরামের সহযোগিতায় পরিচালিত হয়, যা ফ্রান্সের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একত্রিত করে ফরাসি উচ্চশিক্ষার গুণমান ও বিশেষত্ব আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে সাহায্য করে।

ফ্রান্স আইফেল এক্সেলেন্স স্কলারশিপ বিবরণ:

  • আয়োজক দেশ: ফ্রান্স
  • অর্থায়নকারী: ফ্রান্সের ইউরোপ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  • ডিগ্রি স্তর: মাস্টার্স ডিগ্রি এবং পিএইচডি ডিগ্রি
  • প্রোগ্রামের মেয়াদ:
    • মাস্টার এম১ লেভেলের জন্য সর্বোচ্চ ১২ মাস
    • মাস্টার এম২ লেভেলের জন্য সর্বোচ্চ ২৪ মাস
    • পিএইচডি লেভেলের জন্য সর্বোচ্চ ৩৬ মাস

প্রস্তাবিত প্রোগ্রামসমূহ:

এই স্কলারশিপে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি হলো:

Science and technology

  • Biology and health
  • Ecological transition
  • Mathematics and digital
  • Engineering sciences

Social and human sciences

  • History, French language, and civilization
  • Law and political science
  • Economics and management

ফ্রান্স আইফেল এক্সেলেন্স স্কলারশিপ সুবিধাসমূহ:

মাস্টার্স স্তর:

  • মাসিক ভাতা €১,১৮১
  • আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পরিবহন
  • বীমা এবং আবাসন সহায়তা
  • সাংস্কৃতিক কার্যক্রম

পিএইচডি স্তর:

  • মাসিক ভাতা €১,৮০০
  • আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পরিবহন
  • বীমা এবং আবাসন সহায়তা

যোগ্যতার শর্তাবলী:

  • আবেদনগুলি অবশ্যই ফরাসি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
  • মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য, আবেদনকারীকে আবেদন করার সময় ফ্রান্সের বাইরে অবস্থান করতে হবে।
  • পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য, যারা ইতিমধ্যেই ফ্রান্সে পড়াশোনা করছেন তারাও আবেদন করতে পারবেন, তবে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে যারা ফ্রান্সের বাইরে বসবাস করছেন।
  • ধারাবাহিক শিক্ষা এবং পেশাগত প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামগুলি যোগ্য নয়।

আবেদন প্রক্রিয়া:

  • ফরাসি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে আবেদন জমা দিন।
  • প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করুন এবং ব্যক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন।
  • নির্বাচন মেধার ভিত্তিতে হবে, যার মধ্যে পূর্ববর্তী একাডেমিক রেকর্ড এবং গবেষণার বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ:

৮ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখের মধ্যে আবেদন জমা দিতে হবে।

আরও তথ্যের জন্য, ক্যাম্পাস ফ্রান্স-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখুন

আবেদন এর লিংক (link)

মেশিন লার্নিং: আধুনিক প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক

মেশিন লার্নিং: আধুনিক প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক

মেশিন লার্নিং (Machine Learning) হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (Artificial Intelligence) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা, যা তথ্যের মাধ্যমে শেখার এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করে। বর্তমান যুগে, যেখানে তথ্যের ভাণ্ডার অসীম, সেখানে মেশিন লার্নিং-এর ভূমিকা অপরিসীম।

মেশিন লার্নিং


মেশিন লার্নিং-এর সংজ্ঞা ও গুরুত্ব

মেশিন লার্নিং একটি প্রক্রিয়া, যা এলগরিদম এবং পরিসংখ্যানের ব্যবহার করে ডেটা বিশ্লেষণ করে এবং তথ্য থেকে জ্ঞান আহরণ করে। এটি কম্পিউটার সিস্টেমগুলোকে শেখার সক্ষমতা প্রদান করে, যাতে সেগুলো পূর্বাভাস দিতে এবং সমস্যা সমাধান করতে পারে। আধুনিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার লক্ষ্যণীয়, যেমন স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন শিল্পে।

মেশিন লার্নিং-এর ধরণ

মেশিন লার্নিং প্রধানত তিনটি ধরনের মধ্যে বিভক্ত:

  1. সুপারভাইজড লার্নিং: এই ধরণের মেশিন লার্নিংয়ে একটি নির্দিষ্ট আউটপুট সহ ডেটা ব্যবহার করা হয়। মডেলটি প্রশিক্ষণের সময় ইনপুট ডেটা এবং আউটপুটের সম্পর্ক শিখে। উদাহরণস্বরূপ, ভবিষ্যদ্বাণী তৈরি করতে ইতিহাসের ডেটা ব্যবহার করা হয়।

  2. আনসুপারভাইজড লার্নিং: এই প্রক্রিয়ায় ডেটা কোনো পূর্বনির্ধারিত আউটপুট ছাড়াই বিশ্লেষণ করা হয়। এটি সাধারণত ক্লাস্টারিং এবং অ্যাসোসিয়েশন কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়, যেখানে সিস্টেমটি ডেটার গঠন ও সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে।

  3. রিকফরস্মেন্ট লার্নিং: এই প্রক্রিয়ায় একটি এজেন্ট পরিবেশের সাথে যোগাযোগ করে এবং সেখান থেকে শিখে। এটি পুরস্কার এবং শাস্তির ভিত্তিতে কাজ করে, যা স্বায়ত্তশাসিত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক।

মেশিন লার্নিং-এর ধরণ

মেশিন লার্নিং-এর প্রয়োগ

মেশিন লার্নিং (Machine Learning) বর্তমানে প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র, যা তথ্য বিশ্লেষণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে সহজতর করেছে। মেশিন লার্নিং হলো একটি বিশেষ ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence), যেখানে কম্পিউটার এবং অ্যালগরিদমগুলি ডেটা থেকে শিখে এবং পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হয়। এই প্রযুক্তির ব্যবহার প্রতিদিনের জীবনে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করছে।

স্বাস্থ্যসেবায় মেশিন লার্নিং

স্বাস্থ্যসেবায় মেশিন লার্নিং-এর প্রয়োগ অত্যন্ত বিপ্লবী। চিকিৎসা গবেষণায় এবং রোগ নির্ণয়ে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মেশিন লার্নিং মডেলগুলি রোগের পূর্বাভাস দিতে এবং বিভিন্ন রোগ শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের সঠিক নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ডেটা বিশ্লেষণ করা হয়। এছাড়াও, রোগীর চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করে, যা রোগীর ইতিহাসের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট চিকিৎসা পরিকল্পনার উন্নয়নে সহায়ক।

ব্যবসায় মেশিন লার্নিং

ব্যবসায় মেশিন লার্নিং-এর প্রয়োগ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। গ্রাহকের আচরণ ও পছন্দ বুঝতে এবং তাদের ক্রয় প্রবণতা পূর্বাভাস দিতে মেশিন লার্নিং ব্যবহৃত হয়। এটি বিপণন কৌশল তৈরি করতে সাহায্য করে, যার মাধ্যমে লক্ষ্য গ্রাহকদের জন্য সঠিক কৌশল প্রণয়ন করা হয়। যেমন, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে (যেমন Netflix, Amazon) গ্রাহকদের আগ্রহের ভিত্তিতে পণ্য বা বিষয়বস্তু সুপারিশ করা হয়।

অর্থনীতিতে মেশিন লার্নিং-এর ব্যবহার 

অর্থনীতিতে মেশিন লার্নিং-এর ব্যবহার একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বাজার বিশ্লেষণ এবং শেয়ার বাজারের প্রবণতা পূর্বাভাস দিতে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে লাভজনক বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজে বের করতে সক্ষম হচ্ছেন। বিশেষ করে, প্রতারণার ঘটনা রোধ করার জন্যও মেশিন লার্নিং অত্যন্ত কার্যকর।

স্বয়ংক্রিয়করণ

মেশিন লার্নিং প্রক্রিয়ায় স্বয়ংক্রিয়করণের মাধ্যমে কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, উৎপাদন শিল্পে রোবটের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে, যা সময় ও খরচ উভয়ই সাশ্রয় করছে। একইভাবে, স্মার্ট হোম ডিভাইসগুলিও মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর অভ্যাসের ওপর ভিত্তি করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে।

নিরাপত্তা খাতে মেশিন লার্নিং 

নিরাপত্তা খাতে মেশিন লার্নিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সাইবার নিরাপত্তায় মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে অননুমোদিত প্রবেশ এবং প্রতারণামূলক কার্যকলাপ শনাক্ত করা হচ্ছে। এটি বিভিন্ন নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবেলার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

মেশিন লার্নিং এর চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ

যদিও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জীবনে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে, তবুও এর কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ডেটার গুণগত মান, নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা, এবং অ্যালগরিদমের স্বচ্ছতা বিষয়ক উদ্বেগগুলো বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।

মেশিন লার্নিং-এর ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এটি আরও বিস্তৃত এবং সঠিকভাবে কাজ করতে সক্ষম হবে। আগামী দিনে এটি মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনের দ্বার উন্মোচন করবে।

উপসংহার

মেশিন লার্নিং-এর প্রয়োগ বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে ব্যবসা, অর্থনীতি, স্বয়ংক্রিয়করণ এবং নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই এই প্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম। ভবিষ্যতে মেশিন লার্নিং-এর উন্নতি এবং এর প্রয়োগ আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে, যা আমাদের জীবনকে আরও সহজ ও কার্যকরী করবে। প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতা আমাদের নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনার দরজা খুলে দেবে, যা মানবসভ্যতার উন্নয়নে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

রাজশাহীর নামকরণের ইতিহাস

0

রাজশাহীর নামকরণের ইতিহাস

রাজশাহী, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা, যার নামকরণ নিয়ে প্রচলিত রয়েছে একাধিক মতামত ও কল্পকাহিনী। এটি আধুনিক শহরের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে, যা বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে বর্তমান সময়ের মধ্যে বিস্তৃত। রাজশাহী শহরের নামকরণে প্রধানত দুটি ভাষার সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়, সংস্কৃত এবং ফারসি, যা একদিকে যেমন ঐতিহ্যের পরিচায়ক, অন্যদিকে শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে।

রাজশাহীর নামকরণের ইতিহাস


রাজশাহীর নামকরণ

রাজশাহীর নামকরণ নিয়ে প্রথমে একটি ঐতিহাসিক পটভূমি তুলে ধরার প্রয়োজন। স্থানীয় ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়ের মতে, রাজশাহী নামটি রাণী ভবানীর দেওয়া নাম। তিনি দাবি করেন, এই অঞ্চলটি তখন রাণী ভবানীর জমিদারীর আওতায় ছিল এবং রাজশাহী নামটির উত্স এখান থেকেই উদ্ভূত হয়েছে। অন্যদিকে, ব্রিটিশ কর্মকর্তা মিঃ গ্রান্ট উল্লেখ করেছেন যে, রাজশাহী নামটি প্রথম দিকে রাজশাহী চাকলা নামে পরিচিত ছিল। পদ্মা নদীর উত্তরাঞ্চল বিস্তৃত এলাকা নিয়ে এটি গঠিত ছিল, যা পরবর্তীতে রাজশাহী নামে পরিচিত হয়।

নামকরণের দ্বিতীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব হলো “রামপুর-বোয়ালিয়া” নামক দুটি গ্রামের সংমিশ্রণ। রাজশাহী শহরের প্রাথমিক পর্যায়ে এই দুটি গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত হয়। এটি স্থানীয় মানুষের জীবনে এক বিশেষ গুরুত্ব বহন করতো, যেহেতু এটি ছিল স্থানীয় কৃষি ও ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু।

এছাড়াও, রাজশাহী শব্দের বিশ্লেষণে দেখা যায়, “রাজ” এবং “শাহী” এই দুটি শব্দের সমন্বয়ে এটি গঠিত হয়েছে। “রাজ” সংস্কৃত শব্দ, যার অর্থ রাজা এবং “শাহী” ফারসি শব্দ, যার অর্থ বাদশাহি। তাই, রাজশাহী শব্দটির মূল অর্থ রাজা বা বাদশাহর আধিপত্য নির্দেশ করে। বাংলা ভাষায় অনেক শব্দে একাধিক অর্থবোধক শব্দ ব্যবহৃত হয়, যা রাজশাহী নামটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেমন, শাক-সবজি, চালাক-চতুর, ভুল-ভ্রান্তি ইত্যাদি। এভাবে রাজশাহী নামটির উদ্ভবও একই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটেছে।

রাজশাহীর নামকরণ  কল্পকাহিনী 

রাজশাহী শহরের নামকরণ নিয়ে আরও অনেক কল্পকাহিনী প্রচলিত রয়েছে। সাধারণভাবে বলা হয়, এই জেলায় বহু রাজা-জমিদারের বসবাসের কারণে এ জেলার নাম হয়েছে রাজশাহী। কিছু ইতিহাসবিদ এমনও মনে করেন যে, রাজা গণেশের সময় (১৪১৪-১৪১৮) রাজশাহী নামের উদ্ভব ঘটে।

১৯৮৪ সালে রাজশাহীর ৪টি মহকুমাকে নিয়ে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর এবং নবাবগঞ্জ এই চারটি স্বতন্ত্র জেলায় উন্নীত করা হয়। এর মাধ্যমে রাজশাহীর ঐতিহাসিক গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।

সার্বিকভাবে, রাজশাহীর নামকরণের ইতিহাস একটি জটিল প্রক্রিয়া। এটি রাজশাহীর সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং ভৌগোলিক প্রেক্ষাপটের একটি প্রতিফলন। আজকের আধুনিক রাজশাহী শহর তার ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে ধারণ করে এগিয়ে চলছে, যেখানে প্রাচীন নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আধুনিকতার চিহ্ন। এই নামটি শুধু একটি স্থান নির্দেশ করে না, বরং এটি আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের একটি জীবন্ত স্বাক্ষর।

ঢাকা শহরের ইতিহাস

ঢাকা শহরের ইতিহাস 

ঢাকা শহরের ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। এটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শাসকের অধীনে থেকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ঢাকা তার বাণিজ্য, সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক প্রভাবের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। শহরটি মূলত বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠে এবং বিভিন্ন শাসকের শাসনকালে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র এবং প্রশাসনিক নগরীতে পরিণত হয়।

ঢাকা শহরের ইতিহাস

প্রাচীন যুগ

ঢাকার ইতিহাসের সঠিক উৎস সন্ধান করা বেশ কঠিন, তবে ধারণা করা হয় যে, প্রাচীনকালে এই অঞ্চলে গঙ্গারিডাই সভ্যতার বসতি ছিল। তখন থেকেই বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বিভিন্ন জনপদ ও বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে উঠতে থাকে। এই সময়ে ঢাকা একটি অঞ্চল হিসেবে বিকশিত হচ্ছিল, যদিও এটি তখনও শহর হিসেবে গড়ে ওঠেনি।

সুলতানি যুগ

১৩শ শতকে সোনারগাঁও ছিল পূর্ব বাংলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কেন্দ্র। তখন ঢাকা ছিল একটি ছোট্ট জনপদ। তবে, সুলতানি আমলের (১৩৫২-১৫৭৬) শেষ দিকে ঢাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে বিকশিত হয়। ১৪শ শতকে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির বাংলা বিজয়ের পর, ঢাকাকে স্বাধীন সুলতানি বাংলার একটি ইকলিম (প্রদেশ) হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সুলতানরা ঢাকার বাণিজ্যিক গুরুত্ব বুঝতে পেরে এখানকার অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন।

ঢাকা শহরের ইতিহাস

মোগল আমল

মোগল শাসনামলে ঢাকার ইতিহাসে একটি বড় পরিবর্তন আসে। ১৬০৮ সালে মোগল সুবাহদার ইসলাম খান ঢাকাকে সুবাহ বাংলার রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি শহরটিকে একটি বাণিজ্যিক, প্রশাসনিক এবং সামরিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলেন। ইসলাম খান শহরটির নামকরণ করেন “জাহাঙ্গীরনগর” মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের নামে। এই সময়ে ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহরে পরিণত হয়। মোগল আমলে এখানে মসজিদ, দুর্গ, এবং অন্যান্য স্থাপনা নির্মিত হয়, যা আজও ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে টিকে আছে।

ব্রিটিশ আমল

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর ঢাকা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে আসে। এই সময়ে শহরটি তার প্রাচীন জৌলুস হারাতে শুরু করে। তবে, ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি ব্রিটিশরা ঢাকাকে নতুনভাবে উন্নয়নের পথে নিয়ে আসে। ঢাকা তখন পুনরায় একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এবং এখানে ব্রিটিশরা তাদের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতো। ঢাকায় এই সময়ে অনেক ব্রিটিশ স্থাপত্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটে, যার মধ্যে রেলওয়ে এবং সড়ক ব্যবস্থাও ছিল।

পাকিস্তান আমল

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হওয়ার পর ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী হয়। এই সময়ে ঢাকার রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং ভাষা আন্দোলনের ক্ষেত্রে ঢাকা একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ঢাকার রাজপথেই সংঘটিত হয়, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত্তি তৈরি করে।

স্বাধীনতা যুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়। ঢাকা ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের প্রধান কেন্দ্র। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়।

স্বাধীনতার পর

স্বাধীনতার পর ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী হিসেবে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। শহরটি আধুনিক স্থাপত্যের পাশাপাশি ঐতিহাসিক মোগল ও ব্রিটিশ স্থাপত্যের একটি মিশ্রণ উপস্থাপন করে। ঢাকা তার জনসংখ্যার কারণে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলেও এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র হিসেবে টিকে আছে।

ঢাকার ইতিহাস তার বহুমুখী সংস্কৃতি, বাণিজ্যিক প্রবাহ, এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাক্ষ্য বহন করে, যা এই শহরকে অনন্য বৈশিষ্ট্য দিয়েছে।

থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আইইএলটিএসে ৫.৫–এ আবেদন ২০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ

থাইল্যান্ডের উচ্চশিক্ষা

থাইল্যান্ড, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি উন্নয়নশীল দেশ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য পরিচিত। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজি ভাষার বিভিন্ন প্রোগ্রাম চালু রয়েছে, যা বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধাজনক।

থাইল্যান্ডের উচ্চশিক্ষা


সেরা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ

  1. চুলালংকর্ন ইউনিভার্সিটি
  2. মাহিদোল ইউনিভার্সিটি
  3. চিয়াং মাই ইউনিভার্সিটি
  4. থাম্মাসাত বিশ্ববিদ্যালয়
  5. ক্যাসেতসার্ত ইউনিভার্সিটি
  6. প্রিন্স অব সংক্লা ইউনিভার্সিটি
  7. খন ক্যায়েন ইউনিভার্সিটি

সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন বিষয়

  • বিজনেস স্টাডিজ
  • ইঞ্জিনিয়ারিং
  • ফুড অ্যান্ড বেভারেজ স্টাডিজ
  • জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন
  • ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি
  • সোশ্যাল সায়েন্স
  • ন্যাচারাল সায়েন্স

আবেদনের উপায়

থাইল্যান্ডে ভর্তির দুই মৌসুম রয়েছে:

  • অটাম ইনটেক: মে থেকে আবেদন শুরু হয় এবং ভর্তি প্রক্রিয়া আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে হয়।
  • স্প্রিং ইনটেক: জানুয়ারি থেকে আবেদন শুরু হয় এবং মার্চে ক্লাস শুরু হয়।
তাই সর্বোত্তম পন্থা হলো সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। এতে যে শুধু নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম সম্পর্কেই আপ-টু-ডেট থাকা যায়, তা নয়। পাশাপাশি ওপরে উল্লিখিত সাধারণ ইনটেকের বাইরে ভর্তির বিষয়েও জানা যায়। এ যোগাযোগের জন্য সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট চেক করা যেতে পারে। ভর্তির প্রক্রিয়াগুলো পরিচালিত হয় থাই ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন সিস্টেম (https://www.mytcas.com/) বা থাইল্যান্ডের কাউন্সিল অব ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস (https://www.cupt.net/en/)-এর মাধ্যমে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • ভর্তি আবেদনপত্র
  • উচ্চ বিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা (স্নাতকের জন্য)
  • ব্যাচেলর ডিপ্লোমা (মাস্টার্সের জন্য)
  • একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
  • ইংরেজি দক্ষতার প্রমাণ (আইইএলটিএস, টোয়েফল, পিটিই)
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট
  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • বৈধ পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র
  • রিকমেন্ডেশন লেটার
  • পারসোনাল স্টেটমেন্ট
  • আবেদন ফি প্রদানের প্রমাণ

স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন

থাইল্যান্ডের স্টুডেন্ট ভিসা হলো ‘নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা টাইপ ইডি প্লাস’। এর মেয়াদ ৩ মাস এবং শিক্ষার্থীকে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫ ঘণ্টা ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে।

প্রয়োজনীয় নথিপত্র

  • ভর্তি অফার লেটার
  • বৈধ পাসপোর্ট
  • থাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার
  • আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • ইংরেজি দক্ষতা সার্টিফিকেট

ভিসা আবেদন জমা

ভিসার কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য পূর্বে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিংয়ের প্রয়োজন নেই। শিক্ষার্থীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেটে ভিএফএস সেন্টারে সরাসরি কাগজপত্র জমা দিতে পারেন।

অধ্যয়ন ও জীবনযাত্রার সম্ভাব্য খরচ

  • অধ্যয়ন খরচ: ৬০,০০০ থেকে ১,৭৫,০০০ বাথ (বিশ্ববিদ্যালয় অনুযায়ী ভিন্নতা)
  • জীবনযাত্রার খরচ:
    • আবাসন: ৮,০০০ থেকে ১৬,০০০ বাথ
    • খাবার: ১,০০০ থেকে ২,০০০ বাথ
    • পরিবহন: ১,২০০ বাথ

স্কলারশিপের সুবিধা

থাইল্যান্ডে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ অফার করে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • মাসিক ভাতা
  • বিমান টিকেট
  • আবাসন খরচের সহায়তা

খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ

থাইল্যান্ডে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন কাজ করার অনুমতি রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের আয় বাড়ানোর সুযোগ দেয়।

আপনার আগ্রহের ভিত্তিতে থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য এটি একটি চমৎকার গন্তব্য।

টিনের ঘর সাজানোর আইডিয়া

টিনের ঘর সাজানোর আইডিয়া

টিনের ঘরকে সুন্দর ও আরামদায়ক করে সাজানো একটি সৃজনশীল প্রক্রিয়া। সীমিত জায়গায়ও সঠিক ডিজাইন এবং আইডিয়া প্রয়োগ করে আপনি আপনার টিনের ঘরকে সুনিপুণভাবে সাজাতে পারেন। নিচে কয়েকটি আইডিয়া দেওয়া হলো, যা আপনার ঘরকে আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করবে:

টিনের ঘর সাজানোর আইডিয়া

টিনের ঘর সাজানো

১. রঙের ব্যবহার:

  • ইনার পেইন্টিং: টিনের ঘরের ভেতরের অংশে হালকা রঙ যেমন সাদা, ক্রিম, বা হালকা নীল ব্যবহার করতে পারেন। এটি ঘরকে উজ্জ্বল ও বড় দেখাতে সাহায্য করবে।
  • এক্সেন্ট ওয়াল: ঘরের একটি দেয়াল ভিন্ন রঙে রাঙাতে পারেন, যাতে একটু কনট্রাস্ট তৈরি হয়। এতে ঘরটি স্টাইলিশ লাগবে।
  • আউটডোর পেইন্টিং: বাইরের টিনে বিশেষ টিন পেইন্ট ব্যবহার করে উজ্জ্বল রঙের ডিজাইন করতে পারেন, যা ঘরের বাহিরের সৌন্দর্য বাড়াবে।

২. আলো ব্যবহার:

  • প্রাকৃতিক আলো: জানালা বড় এবং উন্মুক্ত রাখার চেষ্টা করুন, যাতে বেশি প্রাকৃতিক আলো আসতে পারে। জানালায় পাতলা, হালকা রঙের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন।
  • এলইডি লাইট: টিনের ঘরে এলইডি স্ট্রিপ লাইট, ছোট ল্যান্টার্ন বা ফেয়ারী লাইট ব্যবহার করতে পারেন, যা ঘরে উজ্জ্বলতা ও নান্দনিকতা যোগ করবে।

৩. ফার্নিচার ও আসবাবপত্র:

  • কম্প্যাক্ট আসবাব: ছোট জায়গার জন্য হালকা ও ভাঁজযোগ্য আসবাব নির্বাচন করুন, যেমন ভাঁজ করা চেয়ার, টেবিল বা শেলফ।
  • মাল্টিফাংশনাল ফার্নিচার: এমন আসবাব ব্যবহার করুন, যা একাধিক কাজ করতে পারে, যেমন বিছানার নিচে স্টোরেজ স্পেস বা ভাঁজযোগ্য বেড।

৪. ওয়াল ডেকোর:

  • ওয়াল আর্ট: টিনের দেয়ালে ছবি, পোস্টার বা ফ্রেম ব্যবহার করে দেওয়ালকে সাজাতে পারেন।
  • প্লাস্টার বোর্ড: টিনের দেয়ালে প্লাস্টার বোর্ড বসিয়ে সুন্দর করে আঁকাবাঁকা ডিজাইন করা যায়।
  • মিরর: দেয়ালে আয়না বসাতে পারেন, যা ঘরটিকে বড় এবং উজ্জ্বল দেখাবে।

৫. ফ্লোর ডেকোর:

  • রাগ বা কার্পেট: টিনের মেঝেতে রাগ বা কার্পেট ব্যবহার করতে পারেন, যা ঘরে উষ্ণতা এবং আরাম যোগ করবে।
  • ম্যাট: দরজার কাছে চটপট মেটাল বা কটনের ম্যাট রাখতে পারেন।

৬. প্রাকৃতিক উদ্ভিদ ও গাছপালা:

  • ইনডোর প্ল্যান্টস: ঘরের ভিতরে ছোট ছোট গাছপালা যেমন মানি প্ল্যান্ট, স্নেক প্ল্যান্ট বা এলোভেরা রাখতে পারেন। এটি ঘরে সতেজতা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এনে দেবে।
  • লটকানো গাছ: জানালার পাশে বা ঘরের কোণে ছোট ছোট পাত্রে গাছ ঝুলিয়ে রাখতে পারেন।
টিনের ঘর সাজানো

৭. ক্লথ ও টেক্সটাইল:

  • পর্দা: সুন্দর ডিজাইনের লম্বা পর্দা টানাতে পারেন, যা ঘরের স্টাইল এবং ব্যক্তিগত স্পেসকে বাড়িয়ে দেবে।
  • বেডকভার ও কুশন: বিভিন্ন ডিজাইনের বেডকভার ও কুশন ব্যবহার করুন, যা ঘরের সৌন্দর্য বাড়াবে।

৮. স্টোরেজ আইডিয়া:

  • ওয়াল শেলফ: দেয়ালে কিছু শেলফ বসিয়ে তাতে বই, শোপিস বা অন্যান্য জিনিস রাখতে পারেন।
  • আন্ডারবেড স্টোরেজ: বিছানার নিচের স্থান ব্যবহার করে স্টোরেজের জন্য প্লাস্টিক বক্স বা চেস্ট রাখতে পারেন।

৯. বাইরের সৌন্দর্য:

  • বাগান: ঘরের চারপাশে ফুলের বাগান বা সবজি গাছ লাগাতে পারেন, যা ঘরের বাইরের পরিবেশকে প্রাণবন্ত করে তুলবে।
  • বারান্দা ডেকোর: ঘরের সামনে ছোট বারান্দা থাকলে সেখানে ফুলের টব, চেয়ার ও ছোট টেবিল রাখতে পারেন, যা আপনাকে বসে আরাম করার জায়গা দেবে।

এভাবে কিছু সৃজনশীল ধারণা প্রয়োগ করে, আপনি আপনার টিনের ঘরকে সাজিয়ে তুলতে পারেন।

লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে নয়জন

লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে নয়জন

বৃহস্পতিবার ভোরে কেন্দ্রীয় বৈরুতের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলার ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে নয়জন হয়েছে, লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এই হামলা শহরের কেন্দ্রের কাছে বাশোরা এলাকা লক্ষ্যবস্তু করা হয়, সিএনএন অঞ্চলটি জিওলোকেটিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে।

ইসরায়েলি বিমান হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে নয়জন



বৃহস্পতিবার লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক আপডেটে বলা হয়েছে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে নয়জন “শহীদ” হয়েছে। এর সাথে, ১৪ জন আহত হয়েছে। কিছু মৃতদেহের পরিচয় নির্ধারণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা চলছে।

মৃত নয়জনের মধ্যে সাতজন স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন, যারা হিজবুল্লাহ-সংযুক্ত ইসলামী স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের জন্য কাজ করছিলেন। কর্তৃপক্ষের একটি অফিস ওই ভবনের এক তলায় ছিল, যা লেবাননের রাজধানীতে হামলার সময় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। সিএনএন তুর্ক ভবনটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় পাওয়া যায়, রাস্তার মধ্যে মাটির স্তূপ পড়ে রয়েছে।

সিএনএন পূর্বে রিপোর্ট করেছে যে হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে।

এটি ২০০৬ সালের পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েল ওই এলাকায় হামলা চালাল। ইসরায়েলের হামলায় লেবাননে এক হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে এবং প্রায় ১০ লক্ষ অধিবাসী বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যখন তারা হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধ বাড়িয়েছে।